সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু
ভার্চুয়াল আকাশে ঘুরাফেরা করা হাজারো তথ্যের মাঝে কিছু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা তথ্য, সত্য ও বাস্তবতার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে মিডিয়া টাইয়াল করা হয়। এই মিডিয়া ট্যায়ালের ক্ষতি যখন একটি অঞ্চল ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ভোক্তভোগী করে, তখন বাস্তবতা উন্মোচিত করার দরকার হয়।
সম্প্রতি সিলেটের বন্যা ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ইটনা মিটামইন সড়ক নিয়ে প্রায় সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কল্পিত তথ্য নিয়ে সরব হন নেটিজেনরা।
এই সব বিকৃত তথ্যসমাহারের স্রোতে কখনও কখনও যোগদেন রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলরা। শুরু হয় মিডিয়া ও ভার্চুয়াল জীবনে বির্তক, উদ্বিগ্ন হন স্থানীয়রা। কিন্তু, এই গুজব নিরসনে বাস্তবতা ও বিজ্ঞানভিত্তিক কোন সমীক্ষা করা হচ্ছে না।
এই তথ্য বিকৃতি থামাতে সরকারি উদ্যোগে বিশেষজ্ঞ মতামত ও সমীক্ষা’র ভিত্তিতে প্রকৃত সমস্যা নিরুপণ এখন সময়ের দাবি।
সিলেটে বন্যার অন্যতম কারণ সিলেটের অপরিকল্পিত নগরায়ন, নাব্যতা হ্রাস, মরা ছড়া/খাল। নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলার বিশাল হাওরে কয়েক হাজার কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ এবং খাল-নদী ভরাট।
সুনামগঞ্জে ৫৩টি হাওরে ১হাজার ৮১৭ কিলোমিটার, নেত্রকোনা ৯টি হাওরে ৩৮০ কিলোমিটার ও সিলেটে বিভিন্ন হাওরে ২১০ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ রয়েছে।
এই সব ফসল রক্ষা বাঁধাগুলো কি বর্ষার পানি আটকায় না,,? ছড়া,নদী,খাল,বীল ভাড়াট হয়ে যাওয়া কি দায়ী নয়?
নাকি প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশে কাল্পনিক অভিযোগে হাওরের সড়ককে অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
পানির ধর্ম নীচে প্রবাহিত হওয়া ও অবস্থান করা, নিম্নাঞ্চল ডুবা বা প্লাবিত হওয়া চিরায়িত নিয়ম। কিন্তু, ২০২৪ সালে সিলেট ৩-৪ বার বন্যা হলেও অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামইনে বন্যা তো দুরের কথা সাধারণ বর্ষার পানিও তখন আসেনি।
সিলেট বন্যা হলে হাওরাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার কথা, কিন্তু বাস্তবে তার বিপরীত। সমুদ্র পিষ্ঠের উচ্চতা বা ভৌগোলিক কারণে সিলেট উচুতে, হাওরাঞ্চল নীচুতে অবস্থান।
সংঙ্গত কারণেই, এই সড়ক হাওরের স্রোতধারা বাঁধাগ্রস্ত করলে, বেশি প্লাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হতো সড়ক সংলগ্ন হাওরাঞ্চল, যা আদৌ হচ্ছে না।
তারপরও, বিকৃত তথ্যের জবাবে ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর গাঢ়ে’ না না রকম উস্কানিমূলক বক্তব্য শুনা যায়।
তবে, সড়কের পূর্বাংশে আমাদের হাওরে পলি মাটি জমে দিন দিন জমির উচ্চতা বাড়ছে, নাব্যতা হারিয়ে সেচ সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যহৃত হওয়ার আশংকায় আতংকিত কৃষকরা।
কাল্পনিক অভিযোগে নয় বিজ্ঞান ভিত্তিক সমীক্ষা চালিয়ে সড়কের ক্ষতি না করে, আরো বেশি পরিবেশ উপযোগী পানি প্রবাহ স্বাভাবিক ব্যাবস্থা করা যেতে পারে।
সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু
লেখক ও জনপ্রতিনিধি।